আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ,
আমরা বিগত ২ দিন (০১/০৯/২৪ ও ০২/০৯/২৪) প্রাণিবিদ্যা পরিবারের সকল শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অ্যালামনাই সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা ২য় বারের মতো এবার নোয়াখালী জেলায়।
২০০+ পরিবারের জন্য খাদ্য সামগ্রী ,মেডিসিন এবং ১০০ পরিবারের জন্য শিশু খাদ্য ও মহিলাদের পরিচর্যা সামগ্রী এবং ২০০০ নতুন জামা-কাপড়( শিশু থেকে শুরু করে পুরুষ - মহিলা সবার জন্য) নিয়ে নোয়াখালী জেলার , ১নং চরমটুয়া ইউনিয়নের নিম্নোক্ত ৬ টি স্পটে বিতরন করি
- পালটোলা
- কালিটোলা
- শ্রীকৃষ্ণপুর(পশ্চিম ও পূর্ব )
- ব্রম্মপুত্র
- ফরিদাবাদ
- ফাজিলপুর
আমাদের মোট ত্রণ সামগ্রীগুলো ছিল
(১) চাল - ১০৫০ কেজি
(২) ডাল - ২০০ কেজি
(৩) তেল - ২০০ লিটার
(৪) লবণ - ২০০ কেজি
(৫) শিশু বাচ্চাদের জন্য ল্যাকটোজেন ১+২
(৬) সুজি - ৫০ কেজি
(৭) চিনি - ৫০ কেজি
(৮) কয়েল - ২০০ প্যাকেট
(৯) মুড়ি - ৫০ কেজি
(১০) খেজুর - ১০ কেজি
(১০) মিনারেল ওয়াটার - ১০০০ লিটার
(১১) মেডিসিন (নাপা + মেট্রো) - ৪০০ প্যাকেট
(১2) শিশু, কিশোর ও বড়দের নতুন জামা কাপড় - ২০০০ পিস
আমরা ০১/০৯/২৪ তারিখ সকাল ৭:২৫ মিনিটে নোয়াখালী সদর উপজেলা পরিষদ ভবনে পৌছাই।মডেল মসজিদে ফ্রেস হয়ে আমরা নোয়াখালীর UNO Sir (আখিনূর জাহান নীলা ) এর সাথে মিটিং করি। UNO sir আমাদের ডিপার্টমেন্টের একজন সম্মানিত শিক্ষক এর আত্মীয় হওয়ায় যাওয়ার পূর্বেই তার সাথে আমাদের সকল বিষয়ে কথা হয়েছিল। UNO sir আমাদের যথেষ্ট সম্ভব সহযোগিতা ও সর্বোচ্চ খেয়াল রেখেছেন।মিটিং এর মাধ্যমে আমরা সবচেয়ে প্রত্যন্ত ও নিডি জায়গাগুলো চিহ্নিত করি ও আমাদের ট্রাক নিয়ে যাত্রা শুরু করি।সন্ধা পর্যন্ত তউপহার সামগ্রী সরবরাহ চলমান ছিল এবং আমরা প্রতিটি পানিবন্দি পরিবারের নিকট কোমর/হাটু সমান পানি অতিক্রম করে প্রথমে ভ্যান,নৌকা ও শেষে পায়ে হেটে হেটে পৌছে দেই উপহারসামগ্রী।এক্ষেত্রে এলাকার স্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমাদেরকে অনেক সহযোগিতা করেছে।
পানিবন্দি এলাকায় প্রতি পরিবারের নিকট নিজ হাতে উপহারসামগ্রী পৌছে দেয়ার কারণে আমরা ১ম দিন ১২০ প্যাকেট এর মতো পৌছে দিতে পারি। আমাদের টিম এর কেউই বাকি সামগ্রীগুলো যেকোন একটি আশ্রয়স্থলে দিয়ে ঢাকায় ব্যাক করার পক্ষে ছিল না।কারণ, গতবার কুমিল্লায় আমরা এই ব্যাপারে কিছু অসংগতি দেখতে পেয়েছিলাম।অবশেষে আমরা UNO স্যার ও আমাদের ৩য় বর্ষের ইব্রাহিম খলিল উভয়ের সহায়তায় আমরা জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট (নিপোর্ট) -এ রাত্রিযাপন করি।ইব্রাহিম ও মুন্না নোয়াখালীর স্থানীয় হওয়ায় অনেক ব্যাপারেই আমাদের সুবিধা হয়েছে। নিপোর্ট এ থাকা এবং রাতের খাবার এর কাহিনী নিয়ে একটি উপন্যাস লেখা যাবে।অন্য একটা পোস্টে এই ব্যাপারে বলা যাবে সুযোগ হলে।
পরেরদিন আমাদের পূর্ব নির্ধারিত প্লান অনুযায়ী স্পট ও এবং পরিবারের লিস্ট ধরে ধরে আমরা বাকি জায়গাগুলোতে উপহারসামগ্রী পৌছে দেই।রাতের খাবার খেয়ে আমাদের লোকাল ভলান্টিয়ারদের যাওয়ার ব্যাবস্থা করে দেয়ার পর "টোকিও কাবাব বিপ্লবে" আমাদের একটু সময় লাগে।কিন্তু এর দীর্ঘমেয়াদি ভালো ফলাফল নোয়াখালীর সব মানুষ পাবে।
আলহামদুলিল্লাহ সবকিছু ঠিকমতো শেষ করে ঢাকায় ফেরার পথে প্রচন্ড বৃষ্টি শুরু হয় এবং সকাল ৭ টা পর্যন্ত টানা বৃষ্টি ছিল।আমরা ১২ জন প্রায় কাকভেজা হয়ে নির্ঘুম থেকে সকাল ৬:২০ এর দিকে যাত্রা শেষ করি।কিন্তু সবার মনের মধ্যে একটাই শান্তি ছিল যে আমরা সঠিক জায়গাগুলোতে উপহারসামগ্রীগুলো পৌঁছে দিতে পেরেছি। এটাই আমাদের এবারের যাত্রার সবচেয়ে বড় অর্জন।
কিন্তু সকালে ডিপার্টমেন্টে নামার পর সবার এটাই মাধাব্যাথা ছিল যে সারারাতের বৃষ্টিতে নোয়াখালীর হাটু সমান পানি তো এখন কোমর সমান হয়ে যাবে। আবারো দুর্ভোগ বাড়লো।
এই ছিল মোটামুটি আমাদের এবারের যাত্রার একটি শর্ট আপডেট।অনেক কথা, অনেক এক্সপেরিয়েন্স লিখে প্রকাশ করা কষ্টকর। বাকি বিষয়গুলো না হয় অফলাইনে শেয়ার করা যাবে।
আবারো সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে শেষ করতে চাই , কারণ সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা ছাড়া কোনকিছুই সম্ভব হতো না।সকল ভলান্টিয়ার , শিক্ষার্থী , শিক্ষক ,কর্মকর্তা -কর্মচারী ও বিশেষ করে অ্যালামনাই এভাবে একসাথে একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করলে প্রাণিবিদ্যা বিভাগ বিশ্বমন্ডলে নেতৃত্ব দিবে❤️
0 Comments